গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ

 

গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ




 


লালমনিরহাটের আদিতমারীতে কাঁথা সেলাইয়ের কথা বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয়ার ৮ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টো আসামিরা গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় শনিবার সকালে এলাকাবাসী দ্রুত আসামিদের গ্রেফতারের দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। তারা বলছেন, পুলিশ মোটা অংকের টাকা খেয়ে আসামিদের ধরছে না । প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো আসামিরা মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে।

মামলার বিবরণ ও ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর বাড়ি উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের চন্দনপাট ময়নার চড়া গ্রামে গিয়ে শনিবার কথা বলে জানা গেছে, গত ৯ নভেম্বর বিকেল ৫টার দিকে প্রতিবেশী আসাদ মিয়া (৫০) স্ত্রী খুঁকি বেগমের কাঁথা সেলাইয়ের কথা বলে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। আসাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের শোবার ঘরে ঢোকা মাত্রই ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করা হয় ওই গৃহবধূকে। এরপর আসাদের অন্য দুই সহযোগী মিলন মিয়া (৪০) ও কুলু মিয়া (৪৫) ধর্ষণের ভিডিও দেখিয়ে তারাও ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে আসামিরা গৃহবধূকে হুমকি দিয়ে বলেন যে, এ ঘটনা বাইরের কাউকে জানালে তার দুই সন্তানসহ পুরো পরিবারকে জানে মেরে ফেলা হবে এবং ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তী সময়ে ভিডিও দেখিয়ে আবারও গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয় বলে গৃহবধূর স্বামী অভিযোগ করেছেন।

ঘটনার দুই দিন পর ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর সন্তানের কাছে ম্যাসেঞ্জারে ধর্ষণের ভিডিওটি থেকে পাঠানো হয়। ভিডিওটি দেখে গৃহবধূর ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তার বাড়িতে কথা বলে থানা পুলিশের সহায়তা নিতে বলে। 

আদিতমারী থানায় গৃহবধূ নিজেই বাদি হয়ে ১২ নভেম্বর রাতে আসাদ মিয়া (৫০) মিলন মিয়া (৪০) ও কুলু মিয়া (৪৫) কে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলাটি থানায় নথিভুক্ত করলেও এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

গৃহবধূর স্বামী বলেন,‘থানায় মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিরা গোটা পরিবারকে শেষ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। শুক্রবার রাতেও হুমকিসহ বাড়ীতে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে মারার ঘটনা ঘটেছে’। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে বলতে গৃহবধূর স্বামী কান্নায় ভেঙে পড়েন।

স্থানীয় চন্দনপাট ময়নার চড়ার এক বাসিন্দা বলেন, এমন একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা এই এলাকায় আর কোনোদিনও ঘটেনি। প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় পরিবারটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কান্তেশ্বর রায়, দুষ্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন এবং পরিবারটির নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলাটি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করছি, আসামিরা শীঘ্রই গ্রেফতার হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ