ফতুল্লায় ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হাতুড়িপেটা


 

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আবুল হোসেন নামে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হাতুড়িপেটার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সকালে ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের মুন্সীবাগ এলাকায় ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খালেক মুন্সীর নেতৃত্বে আবুল হোসেনকে প্রকাশ্যে রাস্তায় মারধর করতে দেখা যায়। ওই সময় আবুলকে বাঁচাতে তার বৃদ্ধা মা ও স্ত্রী এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদেরও মারধর করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সেটি ভাইরাল হয়। 

এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বুধবার দুপুরে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৬ জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মুন্সীবাগ এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবুল হোসেন নিজের বাড়ির কাছে ইট সিমেন্টের ব্যবসা করেন। একই এলাকার যুবলীগ নেতা খালেক মুন্সি, তার ছোট ভাই মালেক মুন্সিও একই ব্যবসা করেন। আবুল হোসেন নতুন করে একই ব্যবসা শুরু করায় তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে শুরু করে খালেক ও তার ভাই মালেক। 

ব্যবসায়ী আবুলের অভিযোগ তার ব্যবসা বন্ধ করতে তারা তার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। বুধবার সকালে খালেক মুন্সীর নেতৃত্বে আনোয়ার, দেলোয়ার, বাদশা, হিরু, কয়লা সাহাবুদ্দিন, ফকির, খোকন চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অপারগতা জালানে তারা আবুলকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাইরে বের করে প্রকাশ্যে রাস্তায় মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা আবুলকে প্রকাশ্যে হাতুড়িপেটা করতে থাকে। 

এ সময় তাকে উদ্ধার করতে তার মা বৃদ্ধা আয়েশা আক্তার, স্ত্রী জোসনা বেগম ও তার খালাতো ভাই দ্বীন ইসলাম এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সড়কে জমে থাকা পানিতে কয়েকজন লোক একজনকে মারধর করছে। ওই সময় দুই নারী চিৎকার করে লোকটিকে রক্ষার চেষ্টা করছে। ঘটনার সময় আশপাশে অনেক লোকজন থাকলেও কেউ ভয়ে এগিয়ে আসেনি। ঘটনার সময় কেউ একজন ঘটনার ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খালেক মুন্সী বলেন, আবুল হোসেনের সঙ্গে তার চাচার ব্যবসায়ীক বিষয় নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। তখন আমি তাদের শান্ত করে বাসায় চলে যাই। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমি দেখেছি। সেখানে আমাকে দেখা যায়নি। আবুল হোসেনের অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট।

এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পেরেছি অভিযুক্তরা খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 
এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল খানার ওসি শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন, অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ