ওঠা হলো না পাকা ঘরে, গাছের নীচে চাপা পড়ে শেষ পরিবার

ওঠা হলো না পাকা ঘরে, গাছের নীচে চাপা পড়ে শেষ পরিবার

 

প্রবাস থেকে ফিরেছেন এক মাস আগে। আট বছরের প্রবাস জীবনের সবটুকু সম্বল দিয়ে নির্মাণ করেছে ২ হাজার ২০০ স্কয়ার ফুটের পাকা ভবন। ৪ দিন পর উঠতেন সেই ঘরে। তার আগেই ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে গেছে প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের স্বপ্ন। সোমবার রাতে ঘরের ওপর গাছ পড়ে একমুহূর্তে ঝরে গেছে নিজাম, স্ত্রী সাথী আক্তার ও চার বছরের শিশু সন্তান লিজা আক্তারের প্রাণ। মঙ্গলবার তাদের নামাজের জানাযা শেষে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিজাম উদ্দিন একমাস আগে মালেয়শিয়া থেকে বাড়িতে এসেছেন।

প্রতিবেশী কামরুজ্জামান বলেন, এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আত্মীয়স্বজনরা ভিড় করছেন। বাবা মা সবাই কান্না করছেন। তাদের ছয় ভাইয়ের দুইভাই বাড়িতে। বাকি তিনজন প্রবাসে। 

নিহত নিজাম উদ্দিনের ভাতিজা আবদুর রহমান বলেন, কাকা ৮ বছর আগে মালয়েশিয়া গেছেন। এর মাঝে দুইবার বাড়ি এসেছেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যা আর তার বাবার অসুস্থতার কারণে বাড়ি ঘর করতে পারেননি। এবার পাকা ঘরের কাজ ধরেছেন। আর চার দিনের মধ্যে ভেতরের একটা রুমে উঠার কথা ছিল তার। নিজাম উদ্দিনের বাবা আবদুর রশিদ অসুস্থ। তিনি শোয়া থেকে উঠতে পারেন না। নিজাম উদ্দিনের ইচ্ছে ছিল পাকা ঘরে বাবা মাকে নিয়ে উঠবেন। তাই রুমও ঠিক করেছেন। কিন্তু গত রাতে সব শেষ হয়ে গেছে।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন জানান, একটি গাছ নিজামের ঘরের ওপর পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিজাম ও তার স্ত্রী নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় শিশু লিজাকে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, দুঃখজনক ঘটনা। নিজাম আমার সাথে বিকেলেও কথা বলেছে। ৮ বছর বিদেশ করে যা কিছু একটা করলো তাও ভোগ করতে পারলো না। বলেছে বাড়ির কাজ শেষ হতে হতে বিল্ডিংয়ে উঠে যাবে। তাই ভেতরে দুইটা রুম ঠিক করছিল। 

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ