হাজতিকে ডাকাতি মামলায় অভিযুক্ত, তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ

হাজতিকে ডাকাতি মামলায় অভিযুক্ত, তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ

 

কারাগারে থাকা হাজতিকে একটি ডাকাতি মামলায় অভিযুক্ত করায় বরিশাল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক তুষার মন্ডলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বরিশালের ৪র্থ যুগ্ম দায়রা জজ আদালতের বিচারক কামাল হোসেন খান গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে একটি ডাকাতি মামলার আসামিদের বেকসুর খালাসের আদেশ দেন। একই সঙ্গে তদন্তে অবহেলার দায়ে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেলকে (আইজিপি) নির্দেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৯ এপ্রিল রাতে বানারীপাড়ার চাখার এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা ফজলুর রহমানের ঘরে সিঁদ কেটে নগদ অর্থ ও অন্যান্য মূল্যবান মালামাল চুরি হয়। এ ঘটনায় ওই শিক্ষক পরদিন ১০ এপ্রিল অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে বানারীপাড়া থানায় একটি চুরি মামলা দায়ের করেন। এক বছর তদন্ত শেষে থানার উপ-পরিদর্শক আল-মামুন ২০১৬ সালের ৯ মে আদালতে এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে নির্দেশ দেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক তুষার মন্ডল।

দায়িত্ব পেয়ে তুষার মন্ডল এই মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে মো. রুবেল, লিটন হাওলাদার ও মানিক বেপারী নামে তিনজনকে আটক করে এবং ফজলুর রহমানের ঘর থেকে চুরি হওয়া একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে আদালতে জমা দেন। ২০১৭ সালের ২৮ আগস্ট তুষার মন্ডল আটক তিনজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে নতুন করে চারজনকে বাকেরগঞ্জের নয়ন হাওলাদার ও মিজানুর রহমান ওরফে নিজাম উদ্দিন এবং বানারীপাড়ার শুভংকর ও ডালিম হাওলাদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

আদালতে এ মামলার বিচার শুরু হলে অভিযুক্ত নয়ন আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে জানায় মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সময় তিনি একটি মামলায় (সেসন নং ৭৬৫/১৬, জিআর ৩৫২/১৪) জেল হাজতে ছিলেন। এর স্বপক্ষে প্রমাণাদীও আদালতে জমা দেয় নয়ন। এতে দেখা যায়, ২০১৫ সালের ৬ মার্চ তাকে জিআর ৩৫২/১৪ মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আদেশে একই বছরের ২৮ মে জামিন পান তিনি।

এতে আদালতের কাছে প্রমাণিত হয়-নয়নকে অভিযুক্ত করে যে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আদালত সাক্ষ্য প্রমাণে নিশ্চিত হয় যে-তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক তুষার মন্ডল বাহবা নিতে অসত্য তথ্য দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। যা তার কর্তব্যে অবহেলার সামিল।

এজন্য তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষকে নির্দেশ দেয় আদালত। আদেশের অনুলিপি আইজিপি, পুলিশ হেড কোয়ার্টার ও বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি বরাবর পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

তুষার মন্ডল পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে পরিদর্শক হিসেবে বরিশাল ডিআইজি কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাসেল শিকদার এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ