বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ধর্ষণের মামলায় ভাসুরসহ ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসাথে তাদের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। রবিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ইয়ারব হোসেন আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলো- নির্যাতিতা গৃহবধূর ভাসুর ওই উপজেলার দক্ষিণ শিহিপাশা এলাকার জিয়া হাওলাদার (৩৫) এবং তার সহযোগী সিদ্দিক হাওলাদার (৪০)। এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় গৃহবধূর স্বামী শহিদুল ইসলামকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির জানান, দক্ষিন শিহিপাশা এলাকার শহিদুল ইসলামের সাথে ওই ভিকটিম গৃহবধূর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয় এবং ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ২০০৬ সালের ৯ মে আনুষ্ঠানিকভাবে শহিদুলের সাথে ভিকটিমের বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এদিকে বিয়ের পর বিভিন্ন সময় গৃহবধূর কাছে স্বামী ও ভাসুরসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুক দাবি করে। যৌতুক দিতে না পাড়ায় তাকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় তারা। এ ঘটনায় ভিকটিম স্বামী, ভাসুর ও শ্বশুরকে আসামি করে ২০০৭ সালে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করেন গৃহবধূ। এ মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে তারা।
২০১১ সালের ২২ আগস্ট রাতে ভিকটিমের বাবার বাড়ি গিয়ে কৌশলে ঘরে ঢুকে ভাসুর জিয়া হাওলাদার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাসুর, তার সহযোগী সিদ্দিক এবং স্বামীর বিরুদ্ধে ২৫ আগস্ট আগৈলঝাড়া থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর ৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত কর্মকর্তা। পরে ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায়ে ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করে ট্রাইব্যুনাল। ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেয়া হয় ভিকটিমের স্বামী শহিদুলকে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
0 মন্তব্যসমূহ