সম্পত্তির লোভে ছেলের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে থানায় বৃদ্ধা


 

নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের মাঝদিঘা পূর্বপাড়া গ্রামে সম্পত্তির লোভে অসুস্থ বৃদ্ধ মা সুফিয়া বেওয়াকে (৮০) পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বড় ছেলে বেলাল হোসেন এবং তার স্ত্রী হালিমা বেগমের বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয় অভিযোগের। অসুস্থ মাকে মারপিটের প্রতিবাদ করায় সহোদর ছাট ভাই তসলিম উদ্দীনকেও হত্যার হুমকি দেওয়ার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অমানবিক ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে মাঝদিঘা পূর্বপাড়া গ্রামে। সদর থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত সাড়ে ১০ টায়। অভিযুক্ত ছেলের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার সদর থানা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন বৃদ্ধা মা।

বৃদ্ধার অভিযোগ, তার চারটি সন্তান, তিন ছেলে এক মেয়ে । বড় ছেলে তাকে দেখাশোনা করে না, প্রায় দিন সম্পত্তি লিখিয়ে নেওয়ার জন্য মারধর করে। বছর দুয়েক আগে ছেলের অত্যাচারে অসুস্থ  হয়ে বৃদ্ধ বাবা আবু তাহের মারা যায়। বৃদ্ধ মা তার সম্পত্তি বড় ছেলেকে বসতবাড়ি নির্মাণের জন্য দেন। তারপরও কিন্তু থামেনি অত্যাচার। এবার বৃদ্ধা মায়ের বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া ২৫ শতাংশ সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে মাকে মারধর, অত্যাচার করে ছেলে। বৃদ্ধা জানান, গত ৩০ বছর যাবৎ তাদের দেখাশোনা, চিকিৎসা, ঔষুধপত্রসহ সকল ভরণপোষণ করে আসছে ছোট ছেলে তসলিম উদ্দীন।মঙ্গলবার রাত ১০ টায় আমার ছোট ছেলের বাসা থেকে বড় ছেলে বেলাল হোসেন তার বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর বড় ছেলে এবং বউমা আমাকে একটি ঘরে আটকে রেখে জমি লিখে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে না চাইলে আমাকে মারপিট ও গালিগালাজ করা শুরু করে ।পরে আমার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশিরা আমাকে রক্ষা করে।

অভিযুক্তের ছোট ভাই তসলিম উদ্দীন জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমার বড় ভাই এবং ভাবি অসুস্থ বাবা মার উপর চাপ দিচ্ছে সম্পত্তির লোভে। বাবা মারা যাওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে মায়ের উপর এই অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। এদিন মাকে খুন করারও চেষ্টা করে ভাই। মা খুবই অসুস্থ, তাতেও অত্যাচার থামেনি। এই নিয়ে তিনবার মারধর করেছে মাকে’ তাঁর দাবি, মাকে যেন আর অত্যাচারিত হতে না হয় সে জন্য থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

বৃদ্ধা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সম্পত্তির জন্য বড় ছেলে মারধর করছে। এর আগেও আমাদের মারধর করেছে। ছোট ছেলে প্রতিবাদ করলে তাকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। 

অভিযুক্ত বেলাল হোসেন বলেন, আমার মাকে কোনো মারধর করা হয়নি। তিনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসিম আহম্মেদ জানান, অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ