ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিউ ল্যাব এইড কার্ডিয়াক সেন্টার নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় ইয়াছমিন আক্তার (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই নারীর স্বামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দক্ষিণ পৈরতলার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা বখতিয়ার আহমেদ খান ওই ক্লিনিকের কনসালটেন্ট ডা. সৈয়দা মাছুমা কাওসারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য সিভিল সার্জনকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
আদালতে দাখিলকৃত মামলার আরজিতে বলা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দক্ষিণ পৈরতলার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা বখতিয়ার আহমেদ খানের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার দীঘদিন ধরে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১৫ মে রবিবার বেলা সকালে সোয়া ১১ টার দিকে হার্টের সমস্যার কারণে ইয়াছমিন আক্তারকে শহরের কুমারশীল মোড়ের নিউ ল্যাব এইড কার্ডিয়াক সেন্টারে নিয়ে যান তার ছেলে সাজ্জাত আহমেদ।
পরে সেখানকার চিকিৎসক মাছুমা কাওসারের অধীনে চিকিৎসাসহ ও কিছু পরীক্ষা করানো হয়। পরে সেই রিপোর্ট দেখে রোগীকে এনজিওগ্রাম করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক মাছুমা কাওছার। তখন ইয়াছমিন আক্তারের ছেলে সাজ্জাত আহমেদ চিকিৎসককে ঢাকা রেফার জন্য বললে তিনি নিউ ল্যাব এইড কার্ডিয়াক সেন্টারে সঠিকভাবে এনজিওগ্রাম করে হার্টের রিং পড়াবেন বলে আশ্বাস দেন।
পরে সেই হাসপাতালের ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) এনজিওগ্রাম করার সকল ব্যবস্থা করেন। এনজিওগ্রাম করার এক পর্যায়ে রোগীর ছেলে সাজ্জাতকে চিকিৎসক জানান রোগীর অবস্থা খারাপ, এখানে আর চিকিৎসা করানো সম্ভব না। দ্রুত তাকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসা করাতে হবে বলে পরের দিন গত সোমবার (১৬ মে) ইয়াছমিন আক্তারকে ডিসচার্জ দিয়ে ঢাকায় রেফার করেন।
এক পর্যায়ে আইসিইউ সুবিধা সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা করার পর ১৬ মে (সোমবার) রাত ১০:৪০ মিনিটে নিউ ল্যাব এইড কার্ডিয়াক সেন্টার থেকে জানানো হয় ইয়াছমিন আক্তার মারা গেছেন।
স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা বখতিয়ার আহমেদ খান ঢাকা ইব্রাহিম কার্ডিয়াক সেন্টার থেকে জানতে পারেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিউ ল্যাব এইড কার্ডিয়াক সেন্টারে এনজিওগ্রাম করার কোনো ব্যবস্থা নেই।
এ ঘটনায় গত ২৬ মে তিনি চিকিৎসক মাছুমা কাওছারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা করে ইয়াছমিন আক্তারকে হত্যার দায়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
চিকিৎসক মাছুমা কাওছার জানান, আমার ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যায়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগী মারা গেলেই পরিবার-পরিজন ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ক্ষেপে। তিনি জানান, আমার এনজিওগ্রাম করার অনুমতি আছে। এ বিষয়ে আমি এমডি করেছি। মামলা করার অধিকার সবাই রাখেন। এ ব্যাপারে এখন আদালত ব্যবস্থা নিবে।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ এমকরামউল্লাহ বলেন, যেহেতু মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
0 মন্তব্যসমূহ